হরতাল অবরোধে দিনে গড়ে সাতটি যানবাহনে আগুন
বাংলার জমিন ডেস্ক :
আপলোড সময় :
২১-১১-২০২৩ ০৫:২৯:৪৭ অপরাহ্ন
আপডেট সময় :
২১-১১-২০২৩ ০৫:২৯:৪৭ অপরাহ্ন
ফাইল ছবি
গত ২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির সমাবেশ ঘিরে সংঘর্ষের পর থেকে এখন পর্যন্ত ১৮৫টি যানবাহন ও ১৫টি স্থাপনায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
সোমবার পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে তা বিশ্লেষণ করে ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, বেশি যানবাহন পুড়েছে ঢাকা শহরে। আর জেলা হিসেবে বেশি আগুন দেওয়া হয়েছে গাজীপুরে।
ফায়ার সার্ভিসের হিসাবে এই সময়ে মোট ১৯৭টি (যানবাহন ও স্থাপনাসহ) আগুনের খবর পেয়েছে তারা।
এর মধ্যে ২৮ অক্টোবর ২৯টি, ২৯ অক্টোবর ১৯টি, ৩১ অক্টোবর ১২টি, ১ নভেম্বর ১৪টি, ২ নভেম্বর সাতটি, ৪ নভেম্বর ছয়টি, ৫ নভেম্বর ১৩টি, ৬ নভেম্বর ১৩টি, ৭ নভেম্বর দুইটি, ৮ নভেম্বর নয়টি, ৯ নভেম্বর সাতটি, ১০ নভেম্বর দুইটি, ১১ নভেম্বর সাতটি, ১২ নভেম্বর সাতটি, ১৩ নভেম্বর আটটি, ১৪ নভেম্বর চারটি, ১৫ নভেম্বর ৬টি, ১৬ নভেম্বর সাতটি, ১৮ নভেম্বর ছয়টি, ১৯ নভেম্বর ১৩টি, ২০ নভেম্বর ছয়টি আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
সরকার পতন এবং নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের ঘোষণা দেয় বিএনপি। একই দিন জামায়াতে ইসলামী সমাবেশের ঘোষণা দেয় মতিঝিলে। আর বায়তুল মোকাররম এলাকায় সমাবেশের ঘোষণা দেয় আওয়ামী লীগ।
তিন দলের এই সমাবেশ ঘিরে স্বাভাবিকভাবেই উৎকণ্ঠা ছিল জনমনে। পুলিশের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিক অনুমতি না পেলেও সেদিন আরামবাগে সমাবেশ করে জামায়াত। আর নয়াপল্টনে বিএনপির সমাবেশ চলাকালে কাকরাইল ও আশেপাশের এলাকায় সংঘর্ষে সমাবেশ পণ্ড হয়ে যায়।
এরপর দফায় দফায় অবরোধ ও হরতাল কর্মসূচি দিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলো সহিংস আন্দোলন চালাচ্ছে। আর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচন করার অবস্থানে অনড়।
একই দাবিতে ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করেছিলো বিএনপি ও সমমনা দলগুলো। ব্যাপক সহিংসতার মধ্যে সেই নির্বাচনে জিতে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসে আওয়ামী লীগ।
২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি গণফোরামের ড. কামাল হোসেনকে সঙ্গে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে ভোটে অংশ নেয়। ভোটে ভরাডুবি ঘটে বিএনপির। এরপর কারচুপির অভিযোগ তোলে তারা। সংসদের মেয়াদের শেষ দিকে এসে বিএনপির সংসদ সদস্যরা পদত্যাগ করেন।
এবার ২০১৪ সালের মত একই দাবিতে আন্দোলন করছে বিএনপি। ফিরে এসেছে সংঘাতের পরিবেশ।
যানবাহনে অগ্নিংযোগ আর নাশকতার ঘটনায় জনমনে উদ্বেগ বাড়ছে।
গত ২৪ দিনে যেসব যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে বাসই ১১৮টি।
এছাড়া ২৬টি ট্রাক, ১৩টি কভার্ড ভ্যান, আটটি মোটরসাইকেল, দুটি প্রাইভেটকার, তিনটি মাইক্রোবাস, তিনটি পিকআপ, তিনটি অটোরিকশা, দুটি ট্রেন, একটি নছিমন, তিনটি লেগুনা, ফায়ার সার্ভিসের একটি গাড়ি, পুলিশের একটি গাড়ি, একটি অ্যাম্বুলেন্স, বিএনপির পাঁচটি অফিস, আওয়ামী লীগের একটি অফিস, একটি পুলিশ বক্স, একটি কাউন্সিলর অফিস, দুটি বিদ্যুৎ অফিস, একটি বাস কাউন্টার, দুটি বাণিজ্যিক শোরুমসহ আরও দুটি স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ঢাকা নগরে ৯৫টি, ঢাকা বিভাগে ৩৭টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ২২টি, রাজশাহী বিভাগে ২৪টি, বরিশাল বিভাগে সাতটি, রংপুর বিভাগে সাতটি, খুলনা বিভাগে দুটি, ময়মনসিংহ বিভাগে দুটি, সিলেট বিভাগে একটি অগ্নি নাশকতার ঘটনা ঘটেছে।
এলাকাভিত্তিক পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ঢাকার মিরপুর এলাকায় আগুন দেওয়ার ঘটনা সবচেয়ে বেশি। মিরপুরে ১৭টি, গুলিস্তানে নয়টি, নয়াপল্টন-কাকরাইল এলাকায় সাতটি, খিলগাঁও-মুগদা এলাকায় সাতটি, পোস্তাগোলা-যাত্রাবাড়ী এলাকায় সাতটি, মতিঝিল-আরামবাগ এলাকায় পাঁচটি, মোহাম্মদপুর চারটি, বারিধারায় চারটি আগুনের ঘটনা ঘটে।
জেলা হিসেবে গাজীপুরে ১৬টি, চট্টগ্রামে ১৪টি, বগুড়া ১৩টি, নারায়ণগঞ্জ ছয়টি, মানিকগঞ্জে চারটি, ফরিদপুরে চারটি, লালমনিরহাট চারটি, নাটোরে চারটি আগুনের খবর পেয়েছে ফায়ার সার্ভিস।
আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসে ৩৪১টি ইউনিট ও এক হাজার ৮৮৮ জন কর্মী কাজ করেছে।৭১/টি
নিউজটি আপডেট করেছেন : Banglar Jamin
কমেন্ট বক্স